অবশেষে কাটোয়া কলেজের ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৯২ জন ছাত্র-ছাত্রী হাতে পেল তাদের ফাইনাল মার্কশিট। দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর এদিন কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার নিজ হাতে পড়ুয়াদের মার্কশিট তুলে দেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট পোর্টালে নম্বর না আপলোড হওয়ায়। এর ফলে ফাইনাল ইয়ার পরীক্ষায় ওই পড়ুয়াদের অকৃতকার্য দেখানো হয়। ফল সংশোধনের দাবিতে কলেজের দুই বিভাগের পড়ুয়াদের নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন কাটোয়া শহর ও কাটোয়া কলেজ তৃনমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে যে বিভাগীয় অধ্যাপকদের গাফিলতির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।কলেজ অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার বলেন, বিভাগীয় প্রধানদের চূড়ান্ত গাফিলতির কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়েছিল। পরিচালন সমিতির বৈঠক ডেকে অভিযুক্ত তিন অধ্যাপককে শোকজ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রেজাল্ট সংশোধন করে পাঠানো হয়।ইতিহাস বিভাগ: ৫৯ জন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ৩৩ জন
মোট ৯২ জন পড়ুয়ার একটি শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হওয়ার মুখে পড়েছিল। অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার আরও বলেন, ‘এটা আমাদের ব্যর্থতা। ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়, তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। ফাইনাল মার্কশিট হাতে পাওয়ার পর কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো পড়ুয়ারা। কারণ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে এম.এ. ভর্তির শেষ দিন ৯ ই সেপ্টেম্বর আর সেই দিনেই মার্কশিট পেয়ে তারা আবেদন করতে পারছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী শ্রেয়া সাহা বলেন আজকে আমরা খুবই খুশি। এতদিন পর ভর্তির শেষ দিনে মার্কশিট হাতে পেলাম। পরিচালন সমিতির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী, অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার এবং কাটোয়া কলেজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের উদ্যোগে এই সমস্যা মিটেছে। কাটোয়া শহর তৃনমূল ছাত্র পরিষদের কনভেনর কচি শেখ বলেন, পড়ুয়াদের সমস্যার কথা শুনে আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেসন জমা দিই। পরবর্তীতে কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জীকেও বিষয়টি জানাই। পরবর্তীতে তাদের এই সমস্যার সমাধানের কথা শুনে আমরাও খুশি। আগামী দিনেও আমরা এইভাবেই পড়ুয়াদের পাশে থাকবো। অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার জানিয়েছেন, পরিচালন সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে যেসব অধ্যাপকের গাফিলতিতে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়েছিল, তাদের শোকজ করা হয়েছে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাটোয়া কলেজের ৯২ পড়ুয়ার দুঃস্বপ্ন শেষ। এখন সামনে নতুন স্বপ্ন উচ্চশিক্ষার পথে এগিয়ে চলা।