হাসপাতালে শয্যাতেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, বিদ্যুৎপৃষ্ট পরীক্ষার্থীর পাশে প্রশাসন।অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যেও মানবিকতার নজির গড়ল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ও প্রশাসন। বাড়িতে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে গুরুতর অসুস্থ হওয়া এক পরীক্ষার্থীর জন্য হাসপাতালে বসেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হলো।
কাটোয়া পুরসভার থানামার্কেটিং পাড়ার বাসিন্দা ও কাটোয়ার ডিডিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রতিমা দলুই। মঙ্গলবার রাতে বাড়ির লোহার গেট বন্ধ করার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারালে পরিবার দ্রুত তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করে। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পরিবার ও পাড়ায়।
পরের দিনই ছিল প্রতিমার ইংরেজি পরীক্ষা। অসুস্থতার খবর স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছাতেই সক্রিয় হয়ে ওঠেন পরীক্ষা কেন্দ্রের ইনচার্জ এবং সেন্টার কমিটির প্রতিনিধিরা। কাটোয়া বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা, যিনি প্রতিমার পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করেন। তাঁদের উদ্যোগে পুলিশি নিরাপত্তায় প্রশ্নপত্র হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর নির্ধারিত সময় মেনেই হাসপাতালের শয্যায় বসে পরীক্ষা দেয় প্রতিমা।
এই ঘটনায় পরিবার ও অভিভাবকদের চোখে জল আসে। প্রতিমার মা বলেন, মেয়েটি এত কষ্টের মধ্যেও পরীক্ষা দিতে পেরেছে,এটাই আমাদের কাছে অনেক বড় স্বস্তি। শিক্ষা সংসদ ও স্কুল কর্তৃপক্ষ যেভাবে পাশে দাঁড়ালেন, আমরা কৃতজ্ঞ।
এ বিষয়ে কেন্দ্রের ইনচার্জ জানান, “কোনও পরীক্ষার্থীকে বঞ্চিত হতে দেব না। নিয়ম মেনে হাসপাতালেই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিমার সহপাঠীরা ও প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তার দৃঢ়তা সকলকে অনুপ্রাণিত করছে। তাঁদের কথায়, “প্রতিমার মতো লড়াকু মানসিকতা আজকের দিনে সকল ছাত্রছাত্রীদের কাছে বড় উদাহরণ।
মানবিক উদ্যোগে একদিকে যেমন পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ রক্ষা পেল, তেমনি প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ আবারও প্রমাণ করল চরম সংকটেও সমাধান সম্ভব, যদি সদিচ্ছা থাকে।